Header Ads

বন্যার্তদের জন্য সঠিক খাদ্য কিভাবে নির্বাচন করবেন ?: ত্রাণ বিতরণে কী ধরনের খাবার প্রয়োজন


ত্রাণের জন্য উপযুক্ত খাবারের প্রকারভেদ: কীভাবে সঠিক খাদ্যসামগ্রী নির্বাচন করবেন

সম্প্রতি বন্যার্তদের সহায়তায় বিপুল সংখ্যক মানুষ সাদরে অংশগ্রহণ করছেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় ত্রাণ সংগ্রহের দৃশ্য দেখে স্পষ্ট। ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যার পর এবারই প্রথম এত মানুষের একত্রিত হওয়া দেখা যাচ্ছে, যা একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে, অনেকেই জানেন না যে ত্রাণের জন্য কী ধরনের খাবার বিতরণ করা উচিত।

যদিও ত্রাণ বিতরণের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, দেখা যাচ্ছে যে কিছু ক্ষেত্রে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ সঠিকভাবে হচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ, কিছু স্থানে প্রচুর পরিমাণ গুঁড়া দুধ, বাণিজ্যিকভাবে তৈরি জুস, নুডলস, কেক, বিস্কুট ইত্যাদি বিতরণ করা হচ্ছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কিছু খাবার যেমন সহজে পচনশীল, তা দুর্যোগ পরিস্থিতিতে উপযুক্ত নয়।

এর পাশাপাশি, বাক্স, প্যাকেট, কার্টন বা বস্তায় খাদ্যসামগ্রী বিতরণের সময় প্যাকেজের বাইরে থেকে বোঝা কঠিন যে এসব খাবার কতজনের জন্য বা কত দিনের জন্য। বিশেষ করে ছোট শিশু বা অন্তঃসত্ত্বা নারীদের জন্য এসব খাবার উপযুক্ত কি না, তা জানা সম্ভব নয়।

ত্রাণ বিতরণের জন্য কিছু নির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে যা অনেকেই হয়তো জানেন না। ২০২০ সালে বাংলাদেশ জাতীয় পুষ্টি পরিষদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ও জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগে একটি নির্দেশিকা প্রস্তুত করা হয়। 

এই নির্দেশিকায় একটি পরিবারের সাত দিনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী এবং পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। প্যাকেজটি এমনভাবে নির্বাচন করা উচিত যাতে এটি প্রথম কয়েক দিন একটি পাঁচ সদস্যের পরিবারের ন্যূনতম পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে। যদি পরিবারের মধ্যে ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশু থাকে, তাও এই খাবার উপযুক্ত হবে।

নির্দেশিকায় উল্লেখিত প্যাকেজে রয়েছে:

  • ১২ কেজি চাল
  • ১.৪ লিটার পুষ্টিসমৃদ্ধ তেল
  • ১.৪ কেজি মসুর ডাল
  • পৌনে ২ কেজি চিড়া
  • আধা কেজি আয়োডিনযুক্ত লবণ
  • ২০০ গ্রাম চিনি বা গুড়
  • ২ কেজি মটর বা মুগ ডালভাজা

এছাড়া, খেসারি ডাল এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কারণ এটি ল্যাথারিজম রোগ সৃষ্টি করতে পারে। চিনির বদলে গুড় ব্যবহার করলে তা স্বাস্থ্যকর। দুর্যোগকালে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া না গেলে এবং রান্নার সুবিধা না থাকলে, প্যাকেজে ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ উপকরণ বেছে নেওয়া উচিত।

যারা ত্রাণ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত, তারা যদি এই নির্দেশিকা অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের পরিবারের জন্য সাত দিনের প্যাকেজ প্রস্তুত করে বিতরণ করেন, তাহলে দুর্যোগের সময় মানুষের দুর্ভোগ এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.