Header Ads

টিউশনি করে জমানো টাকা বন্যার্তদের দিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী


অবসরে ঘুরতে ভালোবাসেন তিনি। শীতকালে রাঙামাটির সাজেক উপত্যকায় বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। সেই লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে টিউশনি করে জমানো টাকা সঞ্চয় করছিলেন। কিন্তু পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ভয়াবহ বন্যার খবর তাঁর হৃদয় স্পর্শ করে। তাই, সঞ্চিত সব টাকা বন্যার্তদের সহায়তায় দান করার সিদ্ধান্ত নেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের এই ছাত্রীর আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে সেই সঞ্চিত টাকা এবং কিছু পুরোনো জামাকাপড় তুলে দেন। তিনি তাঁর পরিচয় গোপন রাখতে অনুরোধ করেছেন।

এছাড়া, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও বন্যার্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবক দল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বুথ বসিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করছে। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থানীয় জনগণও এই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, তারা ইতিমধ্যে ১৩ ট্রাক ত্রাণ বন্যাদুর্গত এলাকায় পাঠিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটও প্রায় ৮০ লাখ টাকার ত্রাণ দিয়েছে। এসব ত্রাণের মধ্যে রয়েছে চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট, মোমবাতি, গ্যাসলাইট, সাবান, সুপেয় পানি, জরুরি ওষুধ, জামাকাপড়, স্যানিটারি ন্যাপকিন, শিশুদের প্যাডসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্য।

কোষাধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় সীমিত সুযোগের মধ্যে শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমে সহায়তা করছে। শিক্ষক-কর্মচারীরাও এগিয়ে আসছেন। বন্যার্তদের জন্য আমাদের শিক্ষার্থীরা বিশেষ প্রাধান্য পাচ্ছে।’

স্বেচ্ছাসেবক রাসেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বাইরের উৎসাহও পাচ্ছি। যেসব এলাকায় অন্য স্বেচ্ছাসেবকরা পৌঁছাতে পারছে না, আমরা সেসব প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পাঠানোর চেষ্টা করছি।’

বন্যার্তদের সহায়তার জন্য তহবিল সংগ্রহের লক্ষ্যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আগামীকাল বুধবার বিকেলে একটি কনসার্টের আয়োজন করেছে। এতে দেশের জনপ্রিয় কিছু ব্যান্ড অংশ নেবে। প্রতিটি টিকিটের মূল্য ২৫০ টাকা, তবে চাইলে এর বেশি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ত্রাণ সংগ্রহ কার্যক্রম সম্পর্কে বিভাগের শিক্ষক ও ছাত্র উপদেষ্টা রাইসুল ইসলাম বলেন, ‘বন্যার্তদের সহায়তায় শিক্ষার্থীদের নিয়ে সুসংগঠিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। শিক্ষার্থীদের মতামত ও পরামর্শ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। বিভাগ থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.